২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৫:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


জেবিবিএ’র পথমেলায় প্রাণের স্পন্দন
জ্যাকসন হাইটসকে লিটল বাংলাদেশের ঘোষণা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৭-২০২২
জ্যাকসন হাইটসকে লিটল বাংলাদেশের ঘোষণা জেবিবিএ’র মেলায় অতিথিবৃন্দ/ছবি সংগৃহীত


নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের তীর্থস্থান বলা চলে জ্যাকসন হাইটস। শুধু নিউইয়র্ক কেন পুরো যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের প্রিয় জায়গা জ্যাকসন হাইটস। এই জ্যাকসন হাইটসে পুরো বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া যাবে। কী নেই এই জ্যাকসন হাইটসে। বাংলাদেশে এখন যা সোনার হরিণ বলা যায় জ্যাকসন হাইটসে তা হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। জ্যাকসন হাইটসকে বাংলাদেশিদের প্রিয় জয়াগায় পরিণত করতে বিশাল ভ‚মিকা রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা যদি এই জ্যাকসন হাইটসে প্রতিষ্ঠান বা অফিস না করতেন তাহলে জ্যাকসন হাইটস আগের মতই গো গো বারেন জায়গা হিসেবে অখ্যাত থাকতো। যারা জ্যাকসন হাইটসকে একখÐ বাংলাদেশে পরিণত করেছেন সেই ব্যবসায়ীদের সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন। যদিও সংগঠন নিয়ে বিভক্তি রয়েছে। মূল নাম জেবিবিএ হলেও নামের শেষে ছোট্ট করে কিছু লাগিয়ে পাকাপোক্ত করা হয়েছে।

যদিও দুপক্ষের নেতাদের অনেক অনুষ্ঠানেই একত্রে মঞ্চে দেয়া যায়। একত্রে দেখা হলেই যেন মনে হয় তারা আত্মার আত্মীয়। কর্মসূচির প্রতিযোগিতা আছে ঠিকই কিন্তু কোনো প্রতিহিংসা নেই। তারপরও জেবিবিএ মানেই অন্য রকম এক অনুভ‚তি। অন্য রকম এক আবেগ। যে আবেগে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ, যে আবেগে জড়িয়ে আছে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি।

 হারুণ ভ‚ইয়া এবং ফাহাদ সোলায়মানের নেতৃত্বাধীন জেবিবিএ’র পথমেলা ছিলো গত ১৭ জুলাই। দিনব্যাপী এই পথমেলা অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ রোড, ৭৭ থেকে ৭৫ স্ট্রিটের মাঝে। প্রতিটি অনুষ্ঠানেরই কিছু লক্ষ্য থাকে। কিছু স্বীকৃতি থাকে, কিছু প্রাপ্তি থাকে। আর এই মেলার সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি হলো জ্যাকসন হাইটসকে লিটন বাংলাদেশ ঘোষণার। ঘোষণাটি দিয়েছেন এই এলাকার কাউন্সিলম্যান শেখ কৃষ্ণনান।

তিনিই এই এলাকার প্রথম সাউথ এশিয়ান প্রতিনিধি। অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শেখ কৃষ্ণনান। তিনি তার বক্তব্যে এই ঘোষণা দিয়েছেন। মেলায় হাজার হাজার বাংলাদেশির স্বতঃস্ফ‚র্ত উপস্থিতিতে তিনি তার আবেগ এবং উচ্ছ¡াস ধরে রাখতে পারেননি। তাই জ্যাকসন হাইটসকে লিটল বাংলাদেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শেখ কৃষ্ণনানের বন্ধু এবং মূলধারার ডায়নামিক লিডার জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলামান জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে জ্যাকসন হাইটসকে লিটল বাংলাদেশ ঘোষণা করা হবে। তারা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এই উদ্যোগ সফল হবে এই কারণেই যে এই কমিটির চেয়ারম্যান হলে শেখর কৃষ্ণনান নিজেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিলটি উস্থাপন করা হবে।

জেবিবিএ’র সফল সভাপতি হারুণ ভ‚ইয়ার সভাপতিত্বে এবং ফাহাদ সোলায়মান, মোহাম্মদ আলম নমির পরিচালনায় ফিতা কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করে কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ড। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিকা গঞ্জালেস রোহাস, জেনিফার রাজকুমার। ছুটিতে থাকার কারণে আসতে পারেননি অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাটেলিনা ক্রুজ। ধন্যবাদ জানানো হয় তাকে এবং দেয়া হয় স্পেশাল ক্রেস্ট। একই ক্রেজ দেয়া হয় জেসিকা গঞ্জালেস, শেখ কৃষ্ণনান, মেলার পৃষ্ঠপোষক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঈনুল ইসলাম, নূরুল আজিম এবং আজিজ হালাল মিটের আজিজকে। জেবিবিএ’র সাবেক এবং বর্তমান কর্মকর্তারা তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। শুধু জেনিফার রাজকুমারের ক্রেস্টটি তার অনুপস্থিতিতে গ্রহণ করেন তারই প্রতিনিধি বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী।

পথমেলায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্র্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজ, হক অ্যান্ড সন্সের প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ফজলুল হক, বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কমিউনিটি বোর্ড থ্রির সদস্য আব্দুর রহিম হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কমিউনিটি থ্রি বোর্ড মেম্বার মুকিত চৌধুরী, বিশিষ্ট অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী,

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঈনুল ইসলাম, নূরুল অজিম, মঈনুজ্জামান চৌধুরী, এ এফ মিসবাউজ্জামান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিলাল চৌধুরী, জেবিবিএ’র সাবেক সভাপতি আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল, রাশিক মালিক, মইদ উদ্দিন মালিক, মেলার আহŸায়ক মনসুর চৌধুরী, যুগ্ম আহŸায়ক ইশতিয়াক রুমি, সদস্য সচিব বাবু খান, সহ-সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলম নমি, আব্দুল হামিদ, প্রধান সমন্বয়কারী লিটু চৌধুরী, সহ-সমন্বয়কারী শাহ চিশতি, লিবার্টি রিনোভেশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আজাদ, উপদেষ্টা মহসীন ননি, আবু নোমান শাকিল, রুহুল আমিন সরকার, মোহাম্মদ কাশেম, শাখাওয়াত বিশ্বাস, রাশেদ আহমেদ, মাসুদ মোর্শেদ, কোষাধ্যক্ষ সেলিম হারুণ, শ্যামল নাথ, এমডি হুমায়ুন কবীর, শাহরিয়ার আরিফ, মাহমুদ হোসেন বাদশা, জোসি চৌধুরী, ফেমড রকি, আফতাব জনি, আমিন ম্যাক, মীর নিজামুল হক, শানতন শীল প্রমুখ।

ডোনাভান রিচার্ড বলেন, আমি সব সময় বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটির পাশে আছি। সেই সাথে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সাথে। তিনি বলেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। একইসাথে ব্যবসায়ীও। তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী আমরা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ফাহাদ সোলায়মান আমার বড় ভাই। আপনাদের যে কোন প্রয়োজনে আমরা দরজা সব সময় খোলা। তিনি জানান, আমিও আপনাদের মতো ইমিগ্র্যান্ট পরিবারের সন্তান। আজকে আমার বাবার ৬৮তম জন্মদিন। সেই জন্মদিনে আমি আপনাদের পাশে থাকার জন্য ছুটে এসেছি।

জেসিকা গঞ্জালেস রোহাস বলেন, এই এলাকার একটি অংশ আমার নির্বাচনী এলাকা। যে কারণে আমি জেবিবিএ’র সাথে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। করোনার সময় আমরা একত্রে কাজ করছি। আগামীতেও আমি জেবিবিএ’র সাথে কাজ করবো।

মঈনুল ইসলাম বলেন, জেবিবিএ’র এই ধরনের ভালো উদ্যোগের সাথে আমি সব সময় আছি।

নূরুল আজিম বলেন, জেবিবিএ সবসময় ভালো কাজ করে এবং প্রবাসে বাংলাদেশকে তুলে ধরছে। তাই আমি জেবিবিএ’র সাথে আছি।

সভাপতি হারুণ ভুইয়া অনুষ্ঠান সফল এবং সার্থক করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান।

অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী এস আই টুটুল, রিজিয়া পারভীন। প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব, কামরুজ্জামান বকুল, চন্দন চৌধুরী, আফতাব জনি, আমানত হোসেন আমান, ত্রিনিয়া হাসান, রোকসানা মির্জা।

অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান এবং সোনিয়া পুরো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন। মূলত মেলা শুরু হয় দুপুরে। বলা চলে অনেকটা খরা মাঠে। কিন্তু সূর্যি মামা পশ্চিমে হেলতে হেলতে পুরো এলাকাটি যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। হাজার হাজার মানুষের পদভারে জ্যাকসন হাইটস যে ন্যূয়ে পড়ে। এস আই টুটুল এবং রিজিয়া পারভীনের গানে মানুষ তাদের উচ্ছ¡াস প্রকাশ করতে থাকে। তাদের উচ্ছ¡াসের বাঁধভাঙে আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র’র পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে। মেলায় ১০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার দেয়া হয়। যার মধ্যে প্রথম পুরস্কার ছিলো ৫ হাজার ডলার, দ্বিতীয় পুরস্কার ছিলো ২ হাজার ডলার এবং তৃতীয় পুরস্কার ছিলো ১ হাজার ডলার।


শেয়ার করুন